প্রকৃতি রহস্য পছন্দ করে। নিজেকে সে আগলে রাখে নানা ধরনের রহস্য দিয়ে। কিছু রহস্যের সমাধান মানুষ করতে পারে। কিছু রহস্য অমীমাংসিতই থেকে যায়। জীবনধারাবিষয়ক ওয়েবসাইট ব্রাইটসাইডের সৌজন্যে আজ থাকছে সেইরকমই পাঁচটি রহস্যময় ঘটনা, এখনো যার কোনো কূল-কিনারা খুঁজে পাননি বিজ্ঞানীরা।
১. সবুজ রঙ এর মানুষ
১২ শতাব্দীর দিকে লন্ডনের এক গ্রামে খুঁজে পাওয়া যায় দুই ভাই-বোনকে। দেখতে আর দশটা স্বাভাবিক মানুষের মতনই ছিল তারা। দুটো হাত, দুটো পা, একটা মুখ। তবে সমস্যাটা ছিল অন্য একটি জায়গায়। আর সেটি হচ্ছে ওদের গায়ের রঙ ছিল পুরোপুরি সবুজ।
প্রথমে কথা বলতে চাওয়া হয় তাদের সাথে। কিন্তু অদ্ভুত কোন ভাষায় কথা বলছিল তারা। পরে অবশ্য ইংরেজি শিখে নেয় এই ভাই-বোন। ধীরে ধীরে হারায় তাদের গায়ের রং। বিশেষজ্ঞদের মতে পৌরাণিক গল্পকাহিনী, কিংবা সমান্তরাল মাত্রা । কিন্তু সঠিক ভাবে কেউ এর কারন ব্যাখ্যা করতে পারেননি।
২. মৃত পাহাড়
রাশিয়ার এই পাহাড়টিকে একনামে মৃত পাহাড় নামেই চেনে মানুষ। একবার এতে দশজন মানুষ নতুন পথ দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পরে তারা ফিরে না আসায় পাঠানো হয় অনুসন্ধানী দল। আর সেই দল গিয়ে অত্যন্ত আশ্চর্য হয়ে দেখতে পায় যে, দশজনের দলের জন্যে নেওয়া তাবুগুলোতে খাবার ভর্তি রয়েছে এবং সেগুলো ভেতর থেকে কেটে ফেলা হয়েছে। ভাবটা এমন যেন সেটা কেটেছে ওরাই! মানুষগুলোকে অবশ্য পাওয়া যায় খানিক দূরে। সবাই মৃত ছিল তখন।
কয়েকজন পরিধান করেছিল মৃতদের পোশাক। আর বাকিদের ভেতরে একজন গাছে উঠতে থাকা অবস্থায় মারা গিয়েছিল। ঠিক কি হয়েছিল সেখানে ঐ দশজনের সাথে তা এখনো জানা যায়নি।
৩. রাষ্ট্রপতি জন এফ কেনেডি হত্যা
আমেরিকার ৩৫তম সবার প্রিয় প্রেসিডেন্ট জেএফকে কে ১৯৬৩ সালের ২২শে নভেম্বর ডালাসে গুলি করে মেরে ফেলা হয়। পরপর ৩টি গুলি করা হয় তাকে। ঘাতক লি হারভে অসওয়াল্ড। তাকে ধরাও হয়। কিন্তু কয়েকদিন পরেই ঘাতককে আদালত প্রাঙ্গনে সবার সামনে গুলি করে মেরে ফেলা হয়।
ধারণা করা হয় এটাও আমেরিকার নিজেদের গোয়েন্দা সংস্হা এবং উচ্চ পর্যায়ের লোকদের কাজ। নাহলে দিনেদুপুরে আমেরিকার মতো দেশের প্রেসিডেন্টকে এভাবে গুলি করে মেরে ফেলা একেবারেই অসম্ভব কাজ। এর আরো কয়েকটি যুক্তি,
০১. প্রেসিডেন্টকে গুলি করে মারার পর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপরই শুরু হয় লাশকে নিয়ে এক নজিরবিহীন গোপনীয়তা। কারণ কি??? আবার তদন্ত কমিটি যখন এই হত্যার রিপোর্ট দেয় কেন সেই রিপোর্টে এত মিথ্যা তথ্য ও গড়মিল দেখা গেলো??
০২. প্রেসিডেন্টকে হত্যা করার জন্য হামলা হবে এরকম কয়েকটি গুজব কয়েকদিন ধরেই বাতাসে ভাসছিলো। তাহলে উনাকে সেইদিন কেন এত কম নিরাপত্তার মাঝে রাখা হলো??
০৩. সেই ঘটনার সাক্ষী সবাই বলছেন তারা সবাই ৩টি নয় বরং ৪টি গুলির শব্দ শুনেছিলেন এবং যে গুলিটিতে প্রেসিডেন্টের মৃত্যু হয় সেটি এসেছিলো অন্য জায়গা থেকে। কেন তাহলে সেই সাক্ষীদের এই দাবীর কোন তদন্ত না করেই সরকারী সংস্হাগুলো আষাড়ে গল্প বলে বেড়াচ্ছে???
৪. রোজভেলে ফ্লাইং সসার ক্র্যাশ
সময় ১৯৪৭ সাল। স্হান আমেরিকার নিউ মেক্সিকোর রোজভেলে। হঠাৎ প্রচন্ডবেগে গোল চাকতির মতো একটি বস্তু আকাশ থেকে সেখানে বিকট শব্দে আছড়ে পড়লো। সেই জায়গাটির প্রচুর মানুষ সেই দৃশ্য নিজ চোখে দেখেছে। সবাই ছুটে গেলো সেখানে। কিন্তু আগুনের প্রচন্ড তাপ ফুলকির মতো বের হওয়ার কারণে কাছে ঘেষতে পারছিলো না কেউই। কিছুক্ষণ বাদেই বিরাট আর্মির দল এসে জায়গাটি ঘিরে ফেললো। আর্মির একজন উচ্চপদস্হ কর্মকর্তা শুধু সাংবাদিকদের জানিয়ে গেলো যে বিরাট চাকতির মতো একটি বস্তু আকাশ থেকে পড়েছে। যেন কোন আকাশযান। বাকিটা পরে জাতে পারবেন। পরেরদিন সব পেপারেও এর খবর ছাপা হলো। তাহলে কি এটা ইউএফও!! এলিয়েনরা তাহলে আসলেই পৃথিবীতে চলে এসেছে! কিন্তু কয়েকঘন্টা বাদেই শুরু হলো সরকারদের ধোকাবাজী। ঘন্টায় ঘন্টায় তারা নতুন করে গল্প ফাদতে লাগলো। একবার বললো এটা আর্মিদেরই নতুন আকাশযান আবার পরে বললো এটা নাকি উল্কাপিন্ড!!! সত্যটা আর কখনো জানা যায়নি এরপর।
৫. বৃষ্টি মানব
১৯৮৩ সালের কথা। যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ার স্ট্রাউডসবার্গ নিবাসী ডন ডেকারের দাদা সম্প্রতি গত হয়েছেন। তাঁর শেষকৃত্য অনুষ্ঠান শেষে ভারাক্রান্ত ডন বাড়ি ফিরে আসেন। বাড়ি ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির ছাদ ও দেয়ালজুড়ে বৃষ্টির মতো পানি পড়া শুরু করে। অথচ বাড়ির ছাদ বা দেয়ালে কোনো পানির পাইপ সংযুক্ত ছিল না। সমস্যা সমাধানের জন্য ডনের বন্ধু পুলিশ ডাকেন। পুলিশের সহায়তায় ডনকে নিয়ে যাওয়া হয় বাড়ির কাছের পিৎজা রেস্টুরেন্টে। অবাক করা বিষয়, ডন বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির বৃষ্টি থেমে যায়। ডনের বন্ধু ও পুলিশ আরো অবাক হয় যখন তাঁরা দেখতে পায়, পিৎজার রেস্টুরেন্টে ডনের ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে সেখানকার দেয়াল ও ছাদজুড়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এ ঘটনার ব্যাখ্যা আজও দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা।

সৈকত হাসান রানা সদা হাস্যোজ্জল একজন মানুষ যিনি লিখতে ও গান শুনতে পছন্দ করেন।